Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

ই-কৃষির বিস্তারে কৃষিকথার অবদান

সভ্যতা পরিবর্তনের শক্তিশালী উপাদান হলো তথ্য। সভ্যতার শুরু থেকেই মানুষ তার অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে উদগ্রীব ছিল। কাগজ ও কালির আবিষ্কার এবং পরবর্তীতে ছাপাখানার উদ্ভব মানুষের তথ্য বিস্তারের আকাক্সক্ষাকে বাস্তবে রূপায়িত করে। তবে মানুষের তথ্য প্রসারের তীব্র বাসনাকে গতিময়তা দেয় টেলিগ্রাফ, টেলিফোন, বেতার, টেলিভিশন এসবের আবিষ্কার। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝিতে কম্পিউটার ও পরবর্তীতে তারবিহীন নানা প্রযুক্তি তথ্য সংরক্ষণ ও বিস্তারে বিপ্লবের সূচনা করে। আজকের এই ডট কমের যুগে আক্ষরিক অর্থেই সারা বিশ্ব একটি ‘গ্লোবাল ভিলেজ’ এ পরিণত হয়েছে। আইসিটি বা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি তাই দিন বদলের হাতিয়ার হিসেবে বিশ্বব্যাপী আদৃত হয়েছে।


কিছুটা দেরি করে হলেও তথ্যপ্রযুক্তির ঢেউ আমাদের দেশকেও স্পর্শ করেছে। বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গঠনের রূপকল্পকে বাস্তবে রূপায়িত করতে গৃহীত উদ্যোগের সুফল পাচ্ছেন প্রায় ১৬ কোটি মানুষ। নাগরিক সেবার প্রতিটি ক্ষেত্রেই তথ্য প্রযুক্তির ছোঁয়ায় আমাদের নিত্যদিনের কাজগুলো হয়েছে আরো সহজ, জীবনকে দিয়েছে গতিময়তা। কৃষি প্রধান বাংলাদেশে কৃষির অবদান শুধু জিডিপি বা গাণিতিক হিসেবেই সীমাবদ্ধ নয়; কৃষি আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের শিকড়।  বেশিরভাগ মানুষের জীবনজীবিকার এই সেক্টরটিকে বাদ রেখে তাই কোনভাবেই ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রয়োজন ডিজিটাল কৃষি ব্যবস্থাপনার। আর সে কারণেই কৃষি সংশ্লিষ্ট সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও বিস্তারে আইসিটির বহুমাত্রিক ব্যবহারে মনোযোগী হয়েছেন, উদ্ভাবন করেছেন অনেক লাগসই তথ্য বিস্তারের উপাদান।


কৃষিতে তথ্যপ্রযুক্তির সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে একটি শব্দ, তা হলো- ই-কৃষি। ই-কৃষিকে অনেক বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। এ সবগুলোকে একত্রিত করলে যা দাঁড়ায় তা হলো, কৃষির জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যসমূহ নির্ভরযোগ্যভাবে কৃষক, কৃষিজাত পণ্যের ব্যবসায়ী, সংশ্লিষ্ট গবেষক ও বিজ্ঞানী, পরিকল্পনাবিদ, ভোক্তা ইত্যাদি গোষ্ঠীর কাছে দ্রুততার সাথে পৌঁছে দিতে ইলেকট্রনিক মাধ্যমের (ইন্টারনেট, ইন্ট্রানেট, রেডিও, টেলিভিশন, মোবাইল ফোন ইত্যাদি) ব্যবহারকেই ই-কৃষি বলা হয়ে থাকে। মোদ্দাকথা, ইলেক্ট্রনিক প্রবাহের মধ্য দিয়ে কৃষি তথ্য সরবরাহের প্রক্রিয়াকেই একবাক্যে ই-কৃষি বলা যায়।


কৃষিতে তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকা আজ অনস্বীকার্য। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও গ্রামীণ জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে ই-কৃষির অবদান স্বীকৃত হয়েছে ইনফরমেশন সোসাইটির বিশ্ব সম্মেলনে (২০০৩-২০০৫)। কৃষি উৎপাদনের প্রতিটি স্তরেই ই-কৃষির অবদান রয়েছে। এই অবদানগুলোকে পরিমাণগত (যেমন-বর্ধিত আয়, অধিক উৎপাদন ইত্যাদি) এবং গুণগত (যেমন-সামাজিক প্রভাব, উন্নত যোগাযোগ ইত্যাদি) উভয়ভাবেই চিহ্নিত করা যায়। ই-কৃষির ব্যবহার উৎপাদনকারী কৃষক ভাইদের বিভিন্ন অনুসন্ধান ব্যয় কমিয়ে সঠিক বাজার চিহ্নিত করতে সহায়তা করে, অপচয় কমায় এবং সর্বোপরি পণ্য বিক্রিতে একটি দরকষাকষির সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়।


আমাদের কৃষক ভাইয়েরা কৃষি তথ্য প্রাপ্তির জন্য অনেকগুলো মাধ্যমের ওপর নির্ভর করে থাকেন। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এ কাশেম (২০০৯) এর গবেষণায় দেখা যায়, বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজন, কৃষি উপকরণ ব্যবসায়ীসহ কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ওপর নির্ভর করা ছাড়াও মাসিক কৃষিকথা পত্রিকার ওপর নির্ভর করে থাকেন প্রায় ১২.৫% কৃষক। বেতারের ওপর নির্ভরতার এই হার ১০.৫%, মোবাইল ফোনে ৬৯.৯% এবং টেলিভিশনে প্রায় ৭৮.৯%। ভারতেও এক গবেষণায় অনুরূপ ফলাফল দেখা যায়। সুতরাং এটি স্পষ্ট, তথ্যপ্রযুক্তির এই হাতিয়ারগুলোর ওপর আমাদের কৃষক ভাইয়েরা যথেষ্ট পরিমাণে নির্ভরশীল। সেজন্য প্রয়োজন কৃষকের চাহিদা অনুযায়ী আধুনিক কৃষিবিষয়ক তথ্য বা কনটেন্টগুলোকে সহজ সাবলীল ভাষায় এসব মাধ্যমে সহজলভ্য করা।


আইসিটি উপকরণ ব্যবহারের সাথে বেড়ে চলেছে আইসিটির অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা। সরকারের সময়োপযোগী নীতিমালা প্রণয়ন ও পদক্ষেপের কারণে প্রসারিত হচ্ছে এ ক্ষেত্রটি। বিগত কয়েক বছরে বিস্ময়করভাবে বেড়েছে মোবাইল ফোনের ব্যবহার। বর্তমানে প্রায় ১২ কোটি ১৮ লাখ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন। ১৯৯৭ সনে মাত্র ৩টি জেলায় নেটওয়ার্ক থাকলেও এখন সবগুলো জেলা নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে। অবিশ্বাস্যভাবে বেড়েছে ইন্টারনেট ব্যবহারের হার। ১৯৯৫ সনে সারাদেশে যেখানে মাত্র ৬০০ জন মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করতেন বর্তমানে সেখানে প্রায় ৪ কোটি ২৭ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। এর মধ্যে প্রায় ৪ কোটি ১৩ লাখ মানুষ মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন (বিটিআরসি: জানুয়ারি, ২০১৫)। আমাদের কৃষক ভাইয়েরা প্রযুক্তি করেছেন আপন। সম্প্রতি দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা যায়, শতকরা ৮৪.১ ভাগ কৃষকের নিজস্ব মোবাইল ফোন  রয়েছে, ৩৪.৭% কৃষক মোবাইলে খুদে বার্তা বা এসএমএসে উত্তর দেন এবং ২৬.৩% কৃষক আইভিআর বা ইন্টারেক্টিভ ভয়েস রেসপন্স ব্যবহার করে থাকেন। স্মার্ট ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে প্রতিনিয়ত। ২০১২ সনে যেখানে মাত্র ১% মানুষ স্মার্ট ফোন ব্যবহার করতেন, ২০১৩ সনে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৭%। সুতরাং এটি স্পষ্ট সামনের দিনগুলোতে তথ্য বিস্তারে স্মার্ট ফোন একটি অত্যাবশ্যকীয় হাতিয়ার হিসেবে বিবেচিত হবে। মোবাইল নামক ক্ষুদ্র এই যন্ত্রটির ক্ষমতা যে কী অসীম তার প্রমাণ মেলে বিশ্বব্যাংকের দেয়া একটি তথ্যে। বিশ্ব ব্যাংকের মতে, কোনো দেশে যদি ১০% মোবাইল ফোন ব্যবহার বৃদ্ধি পায় সে দেশের জিডিপি বৃদ্ধি পায় ১% হারে এবং একইভাবে কোনো দেশে যদি ২জি থেকে ৩জি তে ১০% মোবাইল ব্যবহারকারী বৃদ্ধি পায় সেদেশের জিডিপি বৃদ্ধি পায় শতকরা ০.১৫ ভাগ। তাই প্রযুক্তির প্রসারে ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আনয়নে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহারের কোনো বিকল্পই আজ নেই।


আমাদের প্রথাগত সম্প্রসারণ ব্যবস্থাপনায় একজন মাঠ কর্মীর পক্ষে বিশাল জনগোষ্ঠীর কাছে কার্যকর সম্প্রসারণ সেবা পৌঁছে দেয়া রীতিমতো অসম্ভব। ফলে কৃষকের চাহিদামাফিক, ফলপ্রসূ তথ্য সেবা কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়ে ডিজিটাল কৃষি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে কৃষিতে তথ্যপ্রযুক্তি তথা ই-কৃষি সবচেয়ে উপযুক্ত ও কার্যকর মাধ্যম। এটি খুবই আশাব্যঞ্জক যে, বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ ও প্রচেষ্টার ফলে কৃষি সংশ্লিষ্ট সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানই ই-কৃষির বিস্তারে বেশ কিছু সফলতা অর্জন করেছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সংস্থাগুলোর মধ্যে কৃষি তথ্য সার্ভিস ই-কৃষির বিস্তারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে।


প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও আইসিটি মাধ্যমে কৃষি সংশ্লিষ্টদের কাছে সময়োপযোগী কৃষি তথ্য পৌঁছানোই কৃষি তথ্য সার্ভিসের মূল দায়িত্ব। এ লক্ষ্যে কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকে পরিচালিত ‘কৃষি কল সেন্টার’-এ যেকোন অপারেটর থেকে টোল ফ্রি শর্ট কোড (১৬১২৩) নম্বরে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ফোন করে কৃষি/মৎস্য/প্রাণিসম্পদ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে সমাধান নিতে পারেন। শুক্রবার ও সরকারি বন্ধের দিন ছাড়া সপ্তাহের অন্যান্য দিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ সেবাটি দেয়া হচ্ছে। কৃষি তথ্য সার্ভিসের ওয়েবসাইট (www.ais.gov.bd) -এ কৃষিবিষয়ক প্রয়োজনীয় তথ্যের পাশাপাশি অনলাইনে প্রশ্ন করে স্বল্পতম সময়ে সেই প্রশ্নের সমাধান জানতে পারেন। তৃণমূল পর্যায়ে তথ্য বিস্তারের লক্ষ্যে কৃষি তথ্য সার্ভিস দেশব্যাপী ২৪৫টি কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্র (এআইসিসি) প্রতিষ্ঠা করেছে। এআইসিসি থেকে কৃষক ও কৃষি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ তথ্য সেবা গ্রহণ করছেন। কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকে নির্মিত ‘মাল্টিমিডিয়া ই-বুক’ এর মাধ্যমে বিভিন্ন ফসল ও প্রযুক্তি সম্পর্কে সহজে তথ্য নেয়া যায়। এ ই-বুকগুলো কৃষি তথ্য সার্ভিসের ওয়েবসাইটে আপলোড করা আছে। প্রতিদিনের কৃষিবিষয়ক প্রয়োজনীয় পরামর্শ/তথ্যের জন্য এআইএসের সহায়তায় প্রতিদিন সকাল ৭-২৫ মিনিটে বিটিভিতে সম্প্রচারিত হচ্ছে ‘বাংলার কৃষি’ অনুষ্ঠান। বরগুনা জেলার আমতলীতে এআইএস প্রতিষ্ঠা করেছে কমিউনিটি রেডিও ‘কৃষি রেডিও’ যা সংশ্লিষ্ট এলাকার জনসাধারণের তথ্যসেবা পূরণে সচেষ্ট রয়েছে।  


কৃষি মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ অন্যান্য সরকারি দপ্তর/সংস্থাগুলো তাদের সেবাগুলো আইসিটি মাধ্যমে সম্প্রসারিত করছে যা রীতিমতো আশাজাগানিয়া। প্রত্যেকটি সংস্থার রয়েছে কার্যকর ওয়েবসাইট এবং পাশাপাশি রয়েছে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ওয়েবভিত্তিক সেবা। কৃষি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট (www.moa.gov.bd) থেকে কৃষিনীতি, আদেশসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক বিষয় সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়াও কৃষি মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক গ্রুপ পেজ ‘কৃষি ভাবনা’ থেকেও কৃষি কার্র্যক্রমের বিভিন্ন তথ্য, সাফল্য ইত্যাদি জানা যায়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) এর ওয়েবসাইট (www.dae.gov.bd) থেকে মাঠ ফসলের বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত, যোগাযোগ ঠিকানা, পরামর্শ, প্রশাসনিক বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়। এর পাশাপাশি ‘কৃষকের জানালা’ ও ‘কৃষকের ডিজিটাল ঠিকানা’ নামের দুইটি অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তথ্য সেবা নিতে পারবেন। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) ওয়েবসাইট (www.barc.gov.bd) ছাড়াও ফসলের সর্বোচ্চ ফলন পাওয়ার লক্ষ্যে নির্দিষ্ট ফসল উৎপাদন উপযোগী অঞ্চল নিরূপণের উদ্দেশ্যে প্রণয়ন করেছে ‘ভূমির উপযোগীতাভিত্তিক ফসল অঞ্চল’ ওয়েব www.barcapps.gov.bd/cropzoning) এছাড়াও রয়েছে ‘জলবায়ু তথ্য ব্যবস্থাপনা সিস্টেম’ অ্যাপ্লিকেশন (www.barcapps.gov.bd/climate) পাশাপাশি www.barcapps.gov.bd/cropcalender লিংক থেকে পাওয়া যাবে ‘ফসল পঞ্জিকা’।


বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের রয়েছে নিজস্ব ওয়েবসাইট (www.badc.gov.bd) যেখান থেকে বিএডিসির বিভিন্ন বীজ, সার, সেচ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া যায়। তাছাড়াও বিএডিসির রয়েছে ‘গ্রাউন্ড ওয়াটার জোনিং ম্যাপ’ যা ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যাবশ্যকীয় একটি ডিজিটাল ম্যাপ। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) এর ওয়েবসাইট (www.bari.gov.bd) থেকে বারি উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রযুক্তির তথ্য পাওয়ার পাশাপাশি ‘বারি প্রযুক্তি ভাণ্ডার’ (baritechnology.org/m) মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন থেকেও  প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া যাবে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর ‘বাংলাদেশ রাইস নলেজ ব্যাংক’ (www.knowledgebank-brri.org) এর মাধ্যমে ব্রি উদ্ভাবিত ধানের সব তথ্য পাওয়া যায়। মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট (এসআরডিআই) এর ওয়েবসাইট www.srdi.gov.bd) থেকে ‘অনলাইন ফার্টিলাইজার রিকমেন্ডেশন সিস্টেম’ বা ওএফআরএস নামক সফটওয়্যারের সাহায্যে সহজেই বাংলাদেশের যেকোন স্থানের জমির জন্য সার সুপারিশ সেবা গ্রহণ করা যায়। এছাড়াও ‘লবণাক্ততা তথ্য সেবা’ ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনটির মাধ্যমে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকার নদীর পানিতে কোথায়, কখন এবং কি মাত্রায় লবণাক্ততা থাকে তা জেনে সেচ পরিকল্পনা নেয়া সম্ভব। বাজার বিষয়ক প্রয়োজনীয় তথ্য সেবা পেতে রয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট (www.dam.gov.bd) বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) সেচ কাজে সূত্রপাত করেছে প্রি-পেইড মিটার যার ফলে সেচের ব্যয় কমেছে, পানি ও বিদ্যুতের অপচয় রোধ এবং কৃষকদের আর্থিকভাবে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা বন্ধ হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই কর্মসূচি থেকে নির্মিত জাতীয় ই-তথ্য কোষ (www.infokosh.gov.bd) থেকে কৃষি ও জীবন জীবিকার বিভিন্ন ক্ষেত্রের তথ্য পাওয়া যায়।


সরকারি বিভিন্ন সংস্থাগুলোর পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বেশ কিছু ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলো কৃষি তথ্য ও প্রযুক্তি প্রসারে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-রুরাল ইনফো বিডি (www.ruralinfobd.com), এগ্রিনিউজ বিডি (www.agrinewsbd.com), এগ্রোবাংলা (www.agrobangla.com), কৃষি বাংলা (www.krishibangla.com), সিনজেন্টা (www.syngenta.com) এছাড়াও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উল্লেখযোগ্য কিছু আইসিটিভিত্তিক উদ্যোগ রয়েছে যা ইতোমধ্যে যথেষ্ট পরিচিতি পেয়েছে। এসবের মধ্যে বিআইআইডি প্রতিষ্ঠানের ই-কৃষক (www.ekrishok.com) ও বাতিঘর, উইন ইনকর্পোরেটের রুরাল ইনফো (www.ruralinfobd.com), মোবাইল অপারেটর বাংলালিংকের কল সেন্টার ‘কৃষি জিজ্ঞাসা ৭৬৭৬’, গ্রামীণফোনের ‘কমিউনিটি ইনফরমেশন সার্ভিস’ ডি নেট প্রতিষ্ঠানের ‘ইনফো লেডি’ এবং এমপাওয়ার সোস্যাল লি. এর  ‘এগ্রো নলেজ ব্যাংক’ ও ‘ফার্মারস কোয়্যারি’ উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ।


সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকেই কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকে প্রকাশিত ‘কৃষিকথা’ ম্যাগাজিনটি কৃষির নিত্য নতুন তথ্য, প্রযুক্তি কৃষক ও কৃষিজীবী মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছে। ‘চাষের কথা, চাষির কথা/পাবেন পড়লে কৃষিকথা’ এ স্লোগানকে ধারণ করে ম্যাগাজিনটি আজ ৭৫ বছরের মহীরুহতে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘ এ পথপরিক্রমায় ই-কৃষিসহ কৃষির চমকপ্রদ সব তথ্যের ডানা মেলে কৃষি উৎপাদনে সক্রিয় ভূমিকা রেখে চলেছে। কৃষিকথার বিগত বিভিন্ন সংখ্যায় ওয়েবসাইট, কৃষি কল সেন্টার, কমিউনিটি রেডিও, বেতার ও টেলিভিশনে কৃষিসহ ই-কৃষির বিভিন্ন বিষয়ে নানা অজানা তথ্য প্রদানের মাধ্যমে পাঠককে করেছে সমৃদ্ধ ও আলোকিত। কৃষক, কৃষিকর্মীসহ আপামর পাঠকের চাহিদা বিবেচনা করে যথাসময়ে কৃষিকথা  মুদ্রণের সাথে সাথে কৃষি তথ্য সার্ভিসের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হচ্ছে, যার ফলে বিশ্বের যে কোন প্রান্তের মানুষ ম্যাগাজিনটি ঘরে বসে পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন।


‘লাঙল হাতে ল্যাপটপ মানিয়েছে বেশ/কৃষকই গড়বে ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এটি যেন আজ আর কোন আশার বাণী নয়। ই-কৃষির স্পর্শে বাংলাদেশের কৃষি আরো সমৃদ্ধ হোক; কৃষিকথার সোনালি আলোয় উদ্ভাসিত হোক বাংলার প্রতিটি প্রান্তর-এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।

 

লেখক:

কৃষিবিদ মোহাম্মদ জাকির হাসনাৎ
* তথ্য অফিসার (উদ্ভিদ সংরক্ষণ), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা E-mail : zhasnat@yahoo.com

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon